কোথায় যেন পড়েছিলামঃ"মানুষ সম্পর্ক নিয়ে বাঁচে না,মানুষ বাঁচে সম্পর্কের স্মৃতি নিয়ে"। যখন শুনেছিলাম তখন বিশ্বাস করি নি, কিন্তু কথাটা আজকাল কেমন যেন সত্য বলে মনে হচ্ছে। নাহলে, বাবা-মা ভাই-বোন বন্ধু- আরো আরো অনেকের মাঝে প্রতিদিন বসবাস করেও, কেন আমরা অতলস্পর্শী এক নিঃসঙ্গতায় ভুগি! মনে হয়, আমি একা। এইসব নিত্য কাছে পাওয়া সম্পর্কগুলো কেন আমাদের সর্বব্যাপী আনন্দ দেয় না! বর্তমানের কোলাহলের ভিড়ে একটু ফাঁক পেলেই হারিয়ে যাই অতীতে ফেলে আসা অজস্র সম্পর্কগুলোর মাঝে। ভাবি, আমার সমস্ত সুখ যেন পড়ে আছে ঐসব সম্পর্কগুলোর স্মৃতির মাঝে। আর এতে করে সামনে দন্ডায়মান বর্তমানকে অবহেলা করি... একদিন এই বর্তমান অতীত হয়ে গেলে তখন তার স্মৃতিচারণে মশগুল হয়ে পড়ি।
এত এত সম্পর্কের মাঝে বসবাস করার পরও আমরা নতুন সম্পর্ক খুঁজে ফিরি... স্বপ্ন আর ভালোবাসা দিয়ে ঐসম্পর্ক গড়ে তুলি.. একদিন সম্পর্কটার মুখোমুখি হয়ে যাবার পর ঐটার সাথে কিছুকাল বসবাস করার পর- ঐ সম্পর্কটাও ধীরে ধীরে পুরাতন হতে থাকে। আমরা পুরাতন হয়ে যাওয়া সম্পর্কের মাঝে আর কোনো রোমাঞ্চ খুঁজে পাই না- তখন ছল খুঁজতে থাকি এর থেকে বের হয়ে আসার জন্য। এবং পেয়েও যাই অজস্র... হয়তো, চাইলেও হঠাত্ করে সম্পর্ক বিনষ্ট করে দিতে পারি না; কারণ, সম্পর্কটার সাথে কাটানো মুহূর্তগুলো আমাদের স্মৃতিকাতর করে তোলে হয়ত। একেকবার ভাবি, 'সম্পর্ক' আসলে কী? কিংবা এত এত মানুষ থাকতে নির্দিষ্ট কিছু মানুষের সাথেই কেন বা আমরা একটা সম্পর্ক গড়ে তুলি? এত যত্নে গড়ে তোলা ঐ সম্পর্কটা একদিন ভেঙ্গেই বা যায় কেন?
"মানুষের অনেকগুলো সম্পর্ক নিয়তি-নির্ধারিত বা প্রকৃতি প্রদত্ত। মা-বাবা-ভাই-বোন-আত্নীয়স্বজন ছাড়াও যে দেশটিতে, যে সমাজে, যে সময়কালে সে জন্মগ্রহণ করে, এর কোনোকিছুই সে নিজে বেছে নেয় না। প্রকৃতি তাকে এই সম্পর্কগুলো উপহার দেয়। সে এগুলো মূল্যবান মনে করুক আর না করুক, এমনকি এগুলো তার কাছে বোঝা হয়ে উঠলেও তার কিছু করার নেই, কারণ প্রকৃতিপ্রদত্ত কোনো কিছুকে শেষ পর্যন্ত অস্বীকার করা যায় না। একজন মানুষ বড়জোর এগুলো থেকে পালিয়ে গিয়ে সাময়িকভাবে মুক্তি পেতে পারে- এসকেপিস্টরা সেটাই করে, কিন্তু একেবারে ছেড়ে দেয়া তার পক্ষে সম্ভব হয় না। কিংবা কে জানে, প্রকৃতিপ্রদত্ত বলে, সহজে পাওয়া গেছে বলে মানুষের কাছে এগুলোর মূল্য কম- মানুষের স্বভাবই হচ্ছে এই যে, সে কিছু না কিছু অর্জন করতে চায়, অর্জনে যে আনন্দ, সহজপ্রাপ্তিতে সেই আনন্দ নেই বলেই। আর তাই মানুষ এইসব সম্পর্কেই নিজেকে সীমাবদ্ধ রাখে না। সারাজীবন ধরে সে নানা রকম সম্পর্ক নির্মাণ করে যায়, এমনকি ঘটনাক্রমেও সে অনেক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে।..."
আমরা তার সাথেই সিরিয়াস সম্পর্ক গড়ে তুলি যার ভেতর নিজেদের প্রকাশিত হতে দেখি। অর্থাত্, যার ভেতর আমাদের রুচি বোধ মত ইত্যাদির প্রতিফলন দেখতে পাই তার সাথেই সম্পর্ক গড়ে তুলতে আগ্রহী হই। তার সাথে নিয়মিত যোগাযোগ করি, আমাদের নিত্য দিনের আবেগ অনুভূতি পরস্পর শেয়ার করি, তখন পরস্পরের মাঝে একটা শ্রদ্ধা আর ভালোবাসাপূর্ণ বিশ্বাস গড়ে ওঠে, তখন ভাবি, আসলে সে আমার অস্তিত্বের আরেক অংশ। পরস্পরের সাথে যত বেশি কথাবার্তা হয় রিলেশনে ততবেশি ভালো লাগা তৈরি হয়। ততবেশি পরস্পরের প্রতি আস্থা জন্মে, ততবেশি রিলেশন মজবুত হয়। আর এসবের মাঝে কথাবার্তা বন্ধ হলেই, কমিউনিকেশন গ্যাপ দেখা দিলেই, পরস্পর একে অপর থেকে দূরে ক্রমশ দূরে সরতে থাকে। কমিউনিক্যাশন গ্যাপের ফলে দূরে সরতে সরতে একসময় পরস্পর পরস্পরের প্রতি আস্থা হারিয়ে ফেলে। সে যে আমার অস্তিত্বের একটা অংশ- এই আস্থা।
তাই, সম্পর্ক মানে কনভারসেশন মানে সংলাপ।
আমরা অনেকেই সম্পর্ক তৈরি করতে পারি, ধরে রাখতে পারি না; কেন পারি না? আমার মনে রাখা উচিত্, কেউই ধোয়া তুলশি পাতা নয়। তুমি কিংবা আমি, বা অন্যান্যরা, কেউই না- আমার কথা হচ্ছে,আমি ভালো এবং মন্দে মিশেলে এক মানুষ। যদি আমার এই ভালো ও মন্দ দুই মিলেই কেউ আমাকে গ্রহণ করতে পারে তবে আমি তার ভালো বন্ধু হতে কোনো বাঁধা নেই; আমার কাজ কারো মনোরঞ্জন করা নয়, কাউকে খুশি করে চলা নয়, আর আমার যা ভালো লাগে তা কারোর ভালো না লাগলে, আমার কিই বা করার থাকতে পারে- এখন আমার এই ভালো ও মন্দ মিশেলে কেউ যদি আমাকে গ্রহণ করে, তবে আমি তার সবচেয়ে ভালো বন্ধু বা শুভাকাঙ্খীহতে রাজী আছি। সারাজীবন বন্ধু হিসেবে পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিতে পারি। কোথাও পড়েছিলামঃ'বাবা মা রা তাদের সন্তানদের শরীরটাই শুধু গঠন করে, আত্মাটা তারা নিজস্ব মত করে গড়ে তোলে।'
তুমি সম্পর্ক যদি না রক্ষা করতে পারো শেষপর্যন্ত, মাঝপথে অনিবার্যভাবে ভেঙ্গেই দাও, তাহলে, সম্পর্ক না গড়া ই যুক্তিযুক্ত নয় কি? যার সাথে সম্পর্ক তৈরি করলে একসময় তার প্রতি রোমাঞ্চ আবেগ তুমি হারিয়ে ফেলতে পারো, একবারও কি ভাবলে না, সে... সম্পর্ক গড়ে ওঠার পর তাদের বা তার ভুলগুলোকে চুলচেরা দৃষ্টিতে না দেখা ই উচিত্। বরং, ঐ চুলচেরা বিশ্লেষণগুলো করে তারপর কারোর সাথে রিলেশন গড়ে তোলো, দেখবে পরে আর আফসোস করতে হবে না। কারোর সাথে রিলেশন গড়ে তোলার পর তার অনেক কিছুই ছাড় দিতে হয়, অনেক ভুলই উপেক্ষা করে যেতে হয়- নাহলে, কিসের 'সম্পর্ক'! অপর মানুষদের আচার আচরণগুলো যে দৃষ্টিকোণ থেকে বিচার করা হয়, যদি, সেই 'আত্মীয়' মানুষদের আচার আচরণও ঐ দৃষ্টিকোণথেকে বিচার করি, তাহলে আপন আর পর লোকদের বাছ বিছারারের মাঝে পার্থক্য কী থাকল?
'সম্পর্ক' কচু পাতার উপর টলায়মান কোনো জল নয় যে, হালকা বাতাসেই গড়িয়ে মাটিতে পড়ে যাবে। সম্পর্ক হচ্ছে, পাহাড়ের বুকে জমে থাকা জল, একদিন যা নদী হয়ে সমুদ্রে মেশে এবং বৃষ্টি হয়ে আবার পাহাড়ের বুকে ফিরে আসে। মাঝপথে, গনগনে সূর্যের আলোয় ঝিকমিক করে জল... এ জল শীতরাতে বাঁশঝাড় থেকে ঝরে পড়া জল নয়, এ জল সকালের ঘাসের উপর জমে থাকা জলঃ'যে জলে আগুন জ্বলে।'
আমরা সামাজিকতার কারণে প্রত্যেকটা 'সম্পর্ক'কে একটা নাম দিয়ে চিহ্নিত করে রেখেছি। বাবা মা ভাই বোন বন্ধু আঙ্কেল আন্টি কাজিন... কিন্তু বাস্তবে এইসব সম্পর্ক প্রায় ক্ষেত্রেই সামাজিকতার এই গন্ডিবদ্ধ নামের সীমাবদ্ধতা ছাড়িয়ে বহুদূর চলে যায়- একজন বাবা হতে পারেন তার মেয়েটির চমত্কার একটা বন্ধু, যেখানে কোনো অভিভাবকত্ব খাটে না। আবার বন্ধুও হতে পারে শাসনকারি বা পথ পরিচালনাকারি অভিভাবক।একটা সম্পর্কের ভেতর ছেলেটি যখন শয়তানি করে তখন তোমার বন্ধু; যখন অভিমানে কথা বলা বন্ধ করে দেয়, কড়া কথা শুনিয়ে দেয় তখন তোমার ভাই; যখন সাধ আহ্লাদ স্বপ্ন আর্জি জানায় তখন তোমার ছেলে আর যখন কুটিল মনোভাব নিয়ে সুহৃদের অভিনয় করে যায় তখন শত্রু।
আমরা কখন বুঝব যে, একটা সম্পর্ক কখন মারা গেছে। যখন একটা সম্পর্কে পরস্পরের মাঝে হাসি ঠাট্টা তামাশা মজা অনুভূতি শেয়ার- এইসব ক্রিয়াশীল থাকবে তখন বুঝতে হবে, সম্পর্ক এখনো তাজা আছে; আর যখনই সম্পর্কে ফরমালিটি চলে আসবে তখন বুঝতে হবে, বেশ আগেই সম্পর্কটি মারা গেছে। কখন মারা গেছে- তারা হয়তো টেরই পায় নি।
আমরা একটা সম্পর্কের সাথে আরেকটা সম্পর্কের তুলনা করে বড় ভুলটা করে ফেলি। কোন সম্পর্কই কোনো সম্পর্কের বিকল্প হতে পারে না। প্রত্যেক সম্পর্কেরই নিজস্ব রূপ আর সৌন্দর্য আছে। যে সম্পর্কগুলো আমাদের জন্য স্বাভাবিক জীবন-যাপনে হুমকি হয়ে দাঁড়াবে, ঐগুলো থেকে সরে আসাই উচিত্; তবে, সম্পর্কটা গড়ার আগে সে কী কী হুমকি হতে পারে, আমাদের স্বাভাবিক জীবন যাত্রার স্বাভাবিক গতি ব্যাহত করে কিনা তা জেনে নেওয়াটা কর্তব্য। নাহলে সম্পর্ক গড়ে তোলার পরে আমরা তার হয়তো অজস্র দোষ ত্রুটি খুঁজে পাব- সে হয়তো ভাবে নি যে তার সেই আচরণগুলো আমাদের কাছে ফল্ট হিসেবে ধরা দেবে। কেননা, প্রত্যেকেই ভিন্ন ভিন্ন সংস্কৃতিতে বেড়ে ওঠে। যা আমার কাছে অসভ্যতা আর অকৃতজ্ঞতার নমুনা হতে পারে, হয়তো তার কাছে ঐটা স্বাভাবিক।
একটা সম্পর্কে প্রত্যেকেই তার নিজ নিজ অবস্থান থেকে গুরুত্বপূর্ণ। অনেকটা রামধনুর সাত রঙে রাঙা একটা ফুলের মালার মত। মালাটাতে প্রত্যেক ফুলই নিজ নিজ দিক থেকে স্বতন্ত্র সৌন্দর্য বিলোয়; একটা ঝরে পড়লে বাকিগুলোর সৌন্দর্য ম্লান হয় না- কিন্তু মালাটার সৌন্দর্য হানি ঘটে, খালি খালি আর খানিকটা বেমানান ঠেকে।
আমরা অনেক সময়ই 'ধারণার' উপর ভিত্তি করে সিদ্ধান্তে আসি... ধারণা হচ্ছে সম্ভাবনা, FACT নয়। বস্তুনিষ্টভাবে সঠিক তখ্য যাচাই বাছাই করে তবে সিদ্ধান্ত আসা উচিত্, এতে 'কনফিউশন' বলে কোনো শব্দ আমাদের অভিধানে থাকবে না। তখন প্রত্যেকটা কথা আর কাজ দৃঢ় আত্মবিশ্বাসের সাথে বলতে ও করতে পারাটা অত্যন্ত সহজ হয়ে যাবে।
বেশকিছু দিন আগে একটা নাটক দেখেছিলাম। নাটকের একটা অংশ এরকমঃ
প্রেমের এক পর্যায়ে প্রেমিক প্রেমিকা ফিজিক্যাল রিলেশনশীপ গড়ে তোলার পর একপর্যায়ে মেয়েটি প্র্যাগনেন্ট হয়ে পড়ে। কিন্তু ছেলেটির কাছে তা সে গোপন করে রাখে। একসময় ছেলেটি জানায়, সে পড়াশোনার জন্য বাইরে চলে যাবে কয়েকদিনের জন্য। তখন মেয়েটি তার সাথে একজায়গায় দেখা করে তাকে বিয়ে করার জন্য চাপ দেয়। ছেলেটি এই মুহূর্তে বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানালে অভিমান করে মেয়েটি চলে যায়। তার পরের দিন ছেলেটির সবচেয়ে ঘনিষ্ট বন্ধুকে দূরে এক ব্রিজে ডেকে নিয়ে তার প্র্যাগনেন্ট হবার ব্যাপারটা বলতে চায়। উদ্দেশ্য, সে যাতে তার প্রেমিককে বিয়ে করাতে রাজি করাতে পারে। কিন্তু শেষপর্যন্ত এটা বলতে পেরে না। হয়তো জড়তার কারণে। তখন না বলেই রিকসায় করে বাড়ি ফেরার জন্য রওনা দেয় দুজন পাশাপাশি বসে। পথে কোনো এক আড়াল থেকে ছেলেটি দেখতে পায়, একই রিকসায় করে তার প্রেমিকা আর তারই ঘনিষ্ট বন্ধুটি পাশাপাশি বসে যাচ্ছে। সে চমকে ওঠে ভাবতে থাকে, 'তবে কি আমি তাকে বিয়ে করতে অস্বীকৃত জানিয়েছি তাই আরেকজনকে ধরেছে? কিংবা তার সাথেও কি ফিজিক্যাল রিলেশনশীপ আছে নাকি- আমার কাছে প্রত্যাখ্যাত হয়ে তার কাছে বিয়ের কথা পেড়েছে? সে কি তবে আসলেই এমনি... হাঁ আমি একটা ভুল মেয়েকে ভালোবেসেছিলাম। ফাক ইউ ফরইভার। আর কোনো সম্পর্ক নয় এমন বজ্জাত মেয়ের সাথে... পুরাই আজব আর অবিশ্বাস্য... এমনটা করতে পারলো ও!'
সে বাইরে থেকে ঘটনাটা দেখে তার কাছে যেটা সম্ভাব্য মনে হয়েছিল তাকেই ধ্রুব সত্য বলে ধরে নিয়েছিল। প্রকৃত তথ্য আর যাচাই বাছাই করতে যায় নি। অথচ, আসল ঘটনাটা ছিল তার ধারণা থেকে অনেক দূরে, প্রায় নাগালের বাইরে। একটা সম্পর্কে ৮০% ক্ষেত্রেই ভুল বোঝাবুঝির কারণ হচ্ছে, ধারণা থেকে সরাসরি সিদ্ধান্তে আসার ফলে। প্রকৃত তথ্য বস্তুনিষ্ঠভাবে পর্যালোচনা না করার ফলে।
আমরা এখন ফেসবুক নামের ছায়াতলে এক সম্পর্কের জাল বুনেছি যে জালের বিভন্ন অংশে আমরা জড়িয়ে আছি। অনেকের সাথে অনেকেরই হয়ত ভাষা ও সংস্কৃতির মিল নেই কিন্তু আমরা যেহেতু একই ছায়াতলে অবস্থান করছি সেহেতু আমাদের সম্পর্ক নিয়ে যে কোন প্রকার বিভেদ ভুলে যাওয়ায় উত্তম।
আসলে, একাকিত্বের দুর্বিষহ বিষন্নতা থেকে মুক্তি পেতে কার্যকর টনিক হচ্ছে 'সম্পর্ক'। সম্পর্ক মানুষকে বাঁচতে শেখায়। জীবনের গভীর গোপন আর অমোঘ একাকিত্বকে ভুলে থাকতে সাহায্য করে; আর তাই সম্পর্ক যেমন মানব অস্তিত্বকে টিকিয়ে রাখতে অপরিহার্য, তেমনি তা টিকিয়ে রাখতে যত্নের ত্রূটি করা মানেই নিজেকে ধ্বংসের মুখে স্বেচ্ছায় ছেড়ে দেওয়া।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন