শনিবার, ২৪ আগস্ট, ২০১৯

শালবন বৌদ্ধ বিহার, মাটির নিচের সভ্যতা

শালবন বৌদ্ধ বিহার

শালবন বৌদ্ধ বিহার, বাংলাদেশের প্রাচীন নিদর্শনগুলোর মধ্যে অন্যতম। কুমিল্লা জেলার ময়নামতি কোটবাড়িতে লালমাই পাহাড়ের মাঝামাঝি এলাকায় এই প্রাচীন স্থাপত্যটির অবস্থান। 

পূর্বে এই প্রত্নকেন্দ্রটি শালবন "রাজবাড়ি" নামে পরিচিত ছিল। প্রত্নতাত্বিক খননে বৌদ্ধ বিহারের ধ্বংসাবশেষ উন্মোচিত হওয়ায় একে "শালবন বিহার" নামে আখ্যায়িত করা হয়। তবে এর আসল নাম "ভবদেব বিহার" । খ্রিস্টীয় সাত শতকের মধ্যভাগ হতে আট শতকের মধ্যভাগ পর্যন্ত দেব বংশের শাসকগণ এই অঞ্চল শাসন করেন। উক্ত বংশের চতুর্থ রাজা ভবদেব এই মহাবিহার নির্মাণ করেন। 

বিহারটির মূল ফটকটি ছিল উত্তরপার্শ্বে। মূল ফটকের দুই স্তম্ভে বিভিন্ন প্রকার পশু-প্রাণীর নকশাকৃতি রয়েছে। 

বর্গাকার বিহারটির প্রতিটি বাহুর দৈর্ঘ ৫৫০ ফুট করে। 

চার বাহুতে সর্বমোট ১১৫টি সন্যাসকক্ষ ছিল। বৌদ্ধ ভিক্ষুরা এসব সন্যাস কক্ষেই থাকতেন। 

উত্তর বাহুর মধ্যবর্তী বিশালাকার তোরণ এই বিহাড়টির বিশেষ আকর্ষণ। বর্তমানে এই তোরণের সামনে বিহারের ইতিহাস লিপিবদ্ধ করে একটি সাইনবোর্ড লাগিয়ে দিয়েছে প্রত্নতত্ব অধিদপ্তর। 

মূল মন্দিরটি মধ্যভাগে অবস্থিত। কেন্দ্রীয় মন্দিরটিতে ৬টি ও পুরো বিহারটিতে ৪টি নির্মানযুগের প্রমাণ পাওয়া যায়। প্রথম ও দ্বিতীয় নির্মানযুগের ধ্বংসাবশেষ তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম নির্মানযুগের ধ্বংসাবশেষের নীচে ঢাকা পরেছে। ষষ্ঠ নির্মাণযুগের নির্মিত মন্দির কাঠামোর উপরিভাগের স্থাপত্যিক বৈশিষ্ট কালের বিবর্তে অপসারিত হয়েছে। কেন্দ্রীয় মন্দিরটি তৃতীয় নির্মানযুগে ক্রুশোকৃতি রূপ ধারণ করে এবং ঐ সময়েই চতুর্দিকসহ বিহার দ্বারা বেষ্টিত হয়ে বিশাল প্রতিষ্ঠানে পরিনিত হয়। 

মূল মন্দিরের চারপাশে ছোট ছোট ১২টি মন্দির ও ৮টি স্তুপা উন্মোচিত হয়েছে। 

সাম্প্রতিককালে ২০১৪-১৫ অর্থবছরে প্রত্নতত্ব অধিদপ্তর চট্টগ্রাম বিভাগ, কুমিল্লা কতৃক শালবন বিহারের প্রত্নতাত্বিক খনন সম্পাদন করা হয়। খননের ফলে বিহারের মূল ফটকের পূর্বপাশে একটি প্রাচীন কূপের কাঠামো উন্মোচিত হয়। ধারণা করা হয় সেই সময়কার বৌদ্ধ শাসকশ্রেণী ও ভিক্ষুকগণ এই কূপ থেকে পানি আহরোণের মাধ্যমে যাবতীয় প্রয়োজন পূরণ করত। কূপের খননকাল আনুমানিক সাত হতে আট শতক। 

বিহারটির আশেপাশে এক সময় শালগজারির ঘন বন ছিল বলে এই বিহারটির নামকরণ হয়েছিল শালবন বিহার। এখন শুধু ছোট একটি শালবন মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে বিহারটির পশ্চিম পার্শ্বে। 

এই বিহারটি একাধারে একটি মন্দির, প্রশাসনিক কেন্দ্র এবং মধ্যযুগের একটি বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে সমন্বিতভাবে ব্যাবহৃত হয়েছে। নিকটবর্তী আনন্দ বিহার ও এর কেন্দ্রীয় মন্দির সম্ভবত এই বিহারের পূর্ব দৃষ্টান্ত। 

মন্দির এবং মন্দির পার্শবর্তী অঞ্চলে কয়েক দফা প্রত্নতাত্বিক  খননের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরণের পোড়ামাটির ফলক, ব্রোঞ্চের মূর্তি, নকশাকৃত ইট ও মূদ্রাসহ বিভিন্ন মূল্যবান প্রত্নবস্তু পাওয়া গেছে। যা বর্তমানে বিহারের সামনে ময়নামতি যাদুঘরে সঞ্চিত ও প্রদর্শিত আছে। 

এখানে আবিষ্কৃত প্রত্নসম্পদ ষষ্ঠ হতে দ্বাদশ শতাব্দীর প্রাচীন বঙ্গ, সমতটেরই অতীত স্মৃতি বহন করে। 

শনিবার, ৩ আগস্ট, ২০১৯

হোম স্ক্রিনে গুগলের প্রতিযোগি সার্চ ইঞ্জিনগুলোও জায়গা পাচ্ছে এন্ড্রোয়িডে

গুগল এন্ড্রোয়িড
বেশ কয়েকবার বিভিন্ন কারণে  ইউরোপীয় ইউনিয়নের জরিমানার মুখে পড়তে হয়েছে গুগলকে! ঘাড়ে পরেছে ডাটা চুরির অপবাদও। সর্বশেষ ৪.৩ বিলিয়ন ইউরো ইউরোপীয় ইউনিয়নকে জরিমানা দিয়েছে গুগল।  তাই এবার ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ইউরোপের দেশগুলোর গ্রাহকদের কাছে গুগলের এন্ড্রোয়িডের নতুন ভার্সনে থাকছে একটি চমক! ডিফল্ট সার্চ ইঞ্জিন হিসেবে গুগলের পাশাপাশি আরো কিছু সার্চ ইঞ্জিনকে ডিফল্ট সার্চ ইঞ্জিন হিসেবে বেছে নিতে পারবেন গ্রাহকরা। এমনটাই জানিয়েছে গুগলের মূল কোম্পানি আলফাবেট। 

তবে ইউরোপীয় ইউনিয়নের এই বড় ইকোনোমিক জোনে যে কোন সার্চ ইঞ্জিন ইচ্ছা করলেই আবার পছন্দকৃত সার্চ ইঞ্জিনগুলোর মধ্যে আসতে পারবেনা। এর জন্য একটি প্রক্রিয়া অনুসরণ করবে গুগল। 

হোম স্কিনের পছন্দের লিস্টে মোট চারটি সার্চ ইঞ্জিন লিস্ট পাবে গ্রাহকরা আর এই চারটির মধ্যে তিনটি সার্চ ইঞ্জিনকে গুগল বাছাই করবে নিলামের মাধ্যমে । চারটির মধ্যে গুগলও থাকবে তবে এর জন্য গুগলকে নিজে নিলামে উঠতে হবেনা। 
এভাবে থাকবে সার্চ ইঞ্জিন লিস্ট
২০২০ সালের শুরু থেকেই গুগল এন্ড্রোয়িডের ডিভাইসগুলোর হোম স্ক্রিনে  এই সেবা চালু করবে এবং এই সেবা শুধুমাত্র ইউরোপীয় ইউনিয়নের ইকোনোমিক জোনের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে। 

তবে চারটির মধ্যে কেউ কোন নির্দিষ্ট অর্ডারে থাকবেনা। এই চারটি সার্চ ইঞ্জিনের মধ্যে সময়ে সময়ে অর্ডার পরিবর্তন হবে। 

নিলাম জয়ী তিনটির মধ্যে যদি কোন খারাপ  সার্চ ইঞ্জিন বা মার্কেটে র‍্যাংক নেই এমন কোন  সার্চ ইঞ্জিন যদি নিলামে জেতে তাহলে গ্রাহকদের জন্য সেটা একটু ভোগান্তির বিষয় বা জোর করে গিলানোর মত কাজ হবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন জার্মান ভিত্তিক সার্চ ইঞ্জিন ক্লিকজের সিইও ড. মার্ক আল -হেমস।