শুক্রবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২১

এশিয়ার সর্ববৃহৎ আম গাছ বাংলাদেশে!

 


এশিয়ার সর্ববৃহৎ আম গাছ

এশিয়ার সর্ববৃহৎ আম গাছটির অবস্থান বাংলাদেশে। হ্যাঁ অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি। বিস্ময়কর এই গাছটির অবস্থান ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাংগী উপজেলার হরিণমারী নয়াপাড়া গ্রামে। আপনাদের আজকে জানাবো ঠাকুরগাঁও ভ্রমণে এই গাছটি দর্শনের অভিজ্ঞতা। 

যারা ঢাকা থেকে আসবেন তাদের বলে দিই কিভাবে আসবেন 

ঢাকার শ্যামলী অথবা গাবতলী থেকে সরাসরি দূর পাল্লার বাস যাতায়াত করে ঠাকুরগাঁও জেলা সদরে। আপনি ইচ্ছা করলে ঢাকা থেকে সরাসরি ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাংগী উপজেলাগামী বাসেও আসতে পারেন। ঢাকা থেকে আসতে সময় লাগবে প্রায় ৭ থেকে ৮ ঘন্টা।  তবে আপনি যদি ৭/৮ ঘন্টা জার্নির পর বিশ্রাম নিতে চান সে ক্ষেত্রে আগে জেলা সদরে আসলেই ভাল। সেখানে রয়েছে ভাল মানের বেশ কিছু আবাসিক হোটেল।  সড়ক পথের পাশাপাশি সরাসরি রেল পথেও এখন ঠাকুরগাঁও আসতে পারেন। পঞ্চগড়-ঠাকুরগাঁও থেকে নিয়মিত তিনটি ট্রেন এখন ঢাকায় যাতায়াত করে। বাসে অথবা বাইকে জেলা সদর থেকে বালিয়াডাংগী উপজেলা সদরে প্রায় ২৩ কিলোমিটার  যেতে সময় লাগে প্রায় ঘন্টাখানেকের মত।  ছোট এই শহরটি ছিমছাম এবং গোছালো। শহরের চৌরাস্তা মোড় থেকে উপজেলার হরিণমারী বাজারে সরাসরি ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক চলাচল করে। আপনি ইচ্ছা করলেই  চৌরাস্তা মোড় থেকে ইজিবাইক রিজার্ভ করে নিতে পারেন । রিজার্ভ করে  প্রায় ১২ কিলোমিটারের পথটুকু   যাতায়াতে নিবে সর্বোচ্চ দুইশত থেকে আড়াইশত টাকা আর যেতে সময় লাগবে প্রায় ঘন্টাখানেকের মত। 

বালিয়াডাংগী উপজেলা শহর ছেড়ে প্রত্যন্ত গ্রাম -মাঠ পেরিয়ে সবুজের বুক চিরে এবার ছুটে চলা। এক সময়ের আঁকা-বাঁকা মেঠো পথগুলো এখন পিচ ঢালাইয়ে পেয়েছে উন্নয়নের রূপ। রাস্তার দুই ধারের অপরূপ সৌন্দর্য, সোনালী ধানের বিস্তৃত মাঠ, বুক ভরে নিঃশ্বাস নিতে যেন আলাদাই এক প্রশান্তি। আর এই প্রকৃতিই যেন উত্তর জনপদের মানুষগুলোকে করে তুলেছে সরল ও মায়াময়।

উপজেলা সদর থেকে প্রায় ঘন্টাখানেক পর  পৌঁছে গেলাম উপজেলার হরিণমারী নয়াপাড়া গ্রামে। আম গাছের প্রবেশদ্বারে যেতেই এক শিশু পথ আগলে ধরল আমাদের। প্রবেশ করতে হলে টিকেট কেটে প্রবেশ করতে হবে। প্রতিজনের প্রবেশ মূল্য ২০ টাকা করে। বাইক নিয়ে ভেতরে প্রবেশ করলে  প্রতি বাইকের জন্য আলাদা করে দিতে হবে ২০ টাকা।

ভেতরে প্রবেশ করতেই চোখে পরল আম গাছসহ এর বিস্তৃত এলাকা। প্রথম দেখাতে বিস্মিত না হয়ে আপনি পারবেননা।

আম গাছটি পরিদর্শন করতে হলে আপনাকে মেনে চলতে হবে কিছু নির্দেশনা। নির্দেশনা সম্বলিত একটি নোটিশ বোর্ড দেখতে পাবেন আম গাছের সামনে।

গাছটির বয়স সম্পর্কে জানলে চমকে উঠতে পারেন আপনি! স্থানীয়দের কাছে যতদূর জানা যায় এ কাছের বয়স দুইশত বছরের অধিক।

প্রায় এক একর জায়গা জুড়ে আম গাছটির অবস্থান।  

উত্তরাধিকার সূত্রে গাছটির মালিক এখন নূর ইসলাম ও সাইদুর ইসলাম নামের দুই ভাই

মূল কান্ড থেকে বের হওয়া ডালের সংখ্যা ১২টি তবে শাখা ডাল সহ এর সংখ্যা ১৯টি।

বয়সের সাথে সাথে গাছটি যেন আকাশ ছোঁয়ারও স্বপ্ন দেখেছে।  মাটি থেকে এর উচ্চতা আনুমানিক ৮০ থেকে ৯০ ফুট। দানবাকৃতির গাছটির ব্যাসার্ধ প্রায় ৩৫ ফুট! 

গাছটির সবচেয়ে আকর্ষণীয় দিক হচ্ছে অক্টোপাসের মত মাটি আঁকড়ে ধরা ডালগুলো দূর থেকে মনে হয়, অনেকগুলো আমগাছ জড়াজড়ি করে দাঁড়িয়ে আছে আমের মৌসুমে আমের ভারে আরও নুয়ে থাকে ডালগুলো। মাটি আঁকড়ে ধরা ডালগুলোর আরেকটি বৈশিষ্ট হচ্ছে ডাল থেকে নতুন শেকড় গজিয়ে মাটি ভেদ করেছে।  যার কারণে বড় বড় এই ডালগুলোকে খাবারের জন্য মূল গাছের উপর নির্ভর করতে হয়না। ডালগুলোকে অনেকটা স্বয়ংসম্পূর্ণই বলা চলে।  

দর্শনার্থীরা যেমন গাছটি দেখতে আসেন তেমনি গাছটির পত্র পল্লবে সুমিষ্ট ছায়াতেও প্রাণ জুড়িয়ে যায় দর্শনার্থীদের।

গাছটি সূর্যপূরী জাতের। সূর্যপুরীর নামকরণ বা উৎপত্তিস্থল সম্পর্কে একেবারে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য নেই জনশ্রুতি আছে, আনুমানিক তিন শ বছর আগে তৎকালীন ভারতবর্ষের উত্তর দিনাজপুর জেলার ইসলামপুরের সূর্যপুর এলাকায় এই আমের বেশ জনপ্রিয়তা ছিল ধারণা করা হয়, ওখান থেকেই আমের জাতটি এখানে আসে যেহেতু এই আম অত্যন্ত সুস্বাদু, তাই নাম ছড়াতে বেশি সময় লাগেনি আশপাশের এলাকায় দ্রুত পরিচিতি পায় এ আম ঠাকুরগাঁওয়ের গ্রামাঞ্চলের প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই সূর্যপুরী আমগাছ পাওয়া যায়। সূর্যপুরী ছোট মাঝারি আকারের আম, দেখতে সরু গড় ওজন ১৪০ থেকে ১৬০ গ্রাম আমটি পোক্ত অবস্থায় হালকা সবুজ, পাকলে ত্বক হলুদ রং ধারণ করে আঁটি ও খোসা পাতলা সামান্য আঁশযুক্ত হলেও আমটি বেশ রসাল এই আমের খাদ্যাংশ ৫৬ শতাংশ, মিষ্টতা প্রায় ১৭ শতাংশ সূর্যপুরী আমে ভিন্ন ধরনের সুগন্ধ আছে জুন মাসের শেষে আমটি পোক্ত হয় আর পুরো জুলাই মাস বাজারে পাওয়া যায়। এই গাছটি থেকে প্রতিবছর ১২০ থেকে ১৫০ মণ আম পাওয়া যায়। খ্যাতির কারণে এ গাছের আমের কদর একটু বেশি। ব্যতিক্রমী গাছের সুস্বাদু আম পেতে আগ্রহী অনেকেইঅন্যান্য গাছের আম যেখানে বিক্রি হয় কেজিপ্রতি ৩০ থেকে ৪০ টাকায়, এই গাছের আমের দাম কেজিপ্রতি ১০০ টাকা। 

বিস্ময়কর এই গাছটি দেখতে প্রতিদিনই অনেক দর্শনার্থী আসেন। নারী, পুরুষ, কিশোর এবং কি শিশু দর্শনার্থীরাও আসেন এক পলক এই গাছটি দেখার জন্য। গাছটি দেখতে এসে দর্শনার্থীরা যাতে গাছের কোন প্রকার ক্ষতিসাধন না করেন  সে জন্য রয়েছে বিশেষ নির্দেশনা এবং জরিমানার ব্যাবস্থা। দূরদুরান্ত থেকে আসা দর্শনার্থীদের জন্য এখানে রয়েছে হালকা স্ন্যাক্স এবং খাবারের ব্যাবস্থা। এছাড়াও রয়েছে বিশ্রামাগার এবং শৌচাগার। 

ঐতিহ্যের ধারক এশিয়ার বৃহত্তম এই আম গাছটি যেমনি বিস্ময়কর তেমনি এলাকার পর্যটন বিকাশে রাখছে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা।  

  

 

শনিবার, ২৭ মার্চ, ২০২১

রাজা টংকনাথের রাজবাড়ি

 

রাজা টংকনাথের রাজবাড়ি 

রাজা টংকনাথ চৌধুরী,  ইংরেজ শাসনামলে বর্তমান বাংলাদেশের ঠাকুরগাঁও জেলার রাণীশংকৈল উপজেলায় অবস্থিত মালদুয়ার পরগণার একজন জমিদার ছিলেন। রাজা টংকনাথ এর পূর্ব-পুরুষদের কেউ জমিদার ছিলেন না । বর্তমানে রাণীশংকৈল উপজেলা সদর হতে ৭ কিলোমিটার  পূর্বে কাতিহার নামক জায়গায় গোয়ালা বংশীয় নিঃসন্তান এক জমিদার  বাস করতেন । সেই জমিদারের মন্দিরে সেবায়েত হিসাবে কাজ করতেন টংকনাথের পিতা বুদ্ধিনাথ গোয়ালা জমিদার ভারত এর কাশি যাওয়ার সময় তাম্রপাতে দলিল করে যান যে, তিনি ফিরে না এলে মন্দিরের সেবায়েত বুদ্ধিনাথ জমিদারির মালিক হবেন । গোয়ালা জমিদার ফিরে না আসায় বুদ্ধিনাথ জমিদারির মালিক হন । তবে অনেকে মনে করেন এই ঘটনা বুদ্ধিনাথের দু-এক পুরুষ পূর্বেরও হতে পারে।

বুদ্ধিনাথের তিন ছেলে রামনাথ, টংকনাথ ও গৌরাঙ্গনাথ। এরমধ্যে রামনাথের অকাল মৃত্যু হয়, গৌরাঙ্গনাথ ছিলেন হাবা-গোবা, তবে টংকনাথ ছিলেন চতুর। বুদ্ধিনাথের মৃত্যু হলে টংকনাথ জমিদারির দায়িত্বভার গ্রহণ করেন।  

টংকনাথ তৎকালীন ব্রিটিশ সরকারের আস্থা অর্জন করার জন্য মালদুয়ার স্টেট গঠন করেন । পরে রাজা টংকনাথের স্ত্রী রাণী শংকরী দেবীর নামানুসারে মালদুয়ার স্টেটের নাম করণ করা হয় রাণীশংকৈল যার কারণে বর্তমানে উপজেলা ও উপজেলা সদরটি রাণীশংকৈল নামেই অভিহিত।  

রাজা টংকনাথ চৌধুরী খুব বড় মাপের জমিদার না হলেও তার আভিজাত্যের কমতি ছিল না। ১৯২৫ সালের ১৮ নভেম্বর তৎকালীন ব্রিটিশ গভর্নর হাউসে টংকনাথ চৌধুরীকে ব্রিটিশ সরকার চৌধুরী উপাধিতে ভূষিত করেন। কথিত আছে, টংকনাথের আমন্ত্রণে তৎকালীন বড়লাট এবং দিনাজপুরের মহারাজা গিরিজানাথ রায় রাণীশংকৈলে এলে আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দকে টাকার নোট পুড়িয়ে রীতিমতো রাজকীয় অভ্যর্থনা ও আপ্যায়ন করান এবং বিপুল পরিমাণ স্বর্ণালংকার উপহার দেন। এর ফলে তৎকালীন ব্রিটিশ সরকারের কাছ থেকে চৌধুরী উপাধি এবং দিনাজপুরের মহারাজা গিরিজানাথ রায়ের কাছ থেকে রাজা উপাধি পান।

বর্তমান রাজবাড়িটির ভঙ্গুর অবস্থা হলেও এর নির্মাণশৈলী অতি নিপুন। উনবিংশ শতাব্দীর শেষ ভাগে রাজবাড়িটি নির্মিত হয়। রাজা টংকনাথের পিতা বুদ্ধিনাথের আমলেই রাজবাড়ি নির্মাণ কাজ শুরু হয় । বুদ্ধিনাথের মৃত্যুর পরে রাজা টংকনাথ রাজবাড়ির অসমাপ্ত কাজ শেষ করেন। প্রায় ১০ একর জমির উপর রাজবাড়িটি অবস্থিত । বিশাল এক সিংহ দরজা দিয়ে রাজবাড়ির ভিতরে প্রবেশ করতে হয় । যদিও বর্তমানে সিংহ দরজার ছিটেফোঁটাও নেই। 

রাজবাড়ি সংলগ্ন উত্তর-পূর্ব কোণে কাছারি বাড়ির অবস্থান এবং পূর্বে রয়েছে দুইটি পুকুর

লাল রংয়ের দালানটি স্থাপত্যশৈলীতে আধুনিকতার পাশাপাশি ভিক্টোরিয়ান অলঙ্করণের ছাপ সুস্পষ্ট ।  

রাজবাড়িটির মূল ভবনটি দ্বিতল বিশিষ্ট। উপরে উঠার জন্য রয়েছে সিড়ি, যদিও বর্তমানে এই সিড়িটি এখন ভেংগে পরেছে। 

উপর নিচ, দুই তলা মিলিয়ে ভবনটিতে রয়েছে অসংখ্য কক্ষ। এই কক্ষগুলো জমিদারির বিভিন্ন প্রশাসনিক কাজে ব্যাবহৃত হত। তাছাড়া বিনোদনের জন্য ছিল রঙ্গমহল এবং ছিল সভাকক্ষ। 

রাজবাড়ির ভবনের পশ্চিমে একটি কূপ দৃশ্যমান। রাজবাড়ির পানির যোগানের জন্যই মূলত এই কূপটি ব্যাবহৃত হত।    

বর্তমানে রাজবাড়ি ও তৎসংলগ্ন সব স্থাপনা অবহেলিত ও পরিত্যক্ত অবস্থায় আছে। 

রাজা টংকনাথ ১৯১১ সালে তৎকালীন বৃহত্তর দিনাজপুর জেলার মধ্যে একমাত্র ব্যক্তি ছিলেন, যিনি কলকাতা প্রেসিডেন্সী কলেজে থেকে বি,এ পাশ করেন। তিনি দীর্ঘদিন বেঙ্গল লেজিসলেটিভ কাউন্সিলের সদস্য ছিলেন। টানা ১৫ বছর তিনি জেলা বোর্ডের সদস্য ছিলেন ও প্রথম ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।

রাজা টংকনাথ নিজ খরচে দুইটি দাতব্য চিকিৎসালয় প্রতিষ্ঠা ও পরিচালনা করতেন। ৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিয়মিত অনুদান দিতেন। রাজা টংকনাথ একটি ইংলিশ স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন এবং ২০০ ছাত্রের থাকা ও খাওয়ার ব্যবস্থাসহ স্কুলের উন্নয়নের সার্বিক দায়ভার গ্রহণ করেন। তার পিতা বুদ্ধিনাথ চৌধুরীর নামানুসারে প্রতিষ্ঠিত তৎকালীন B.N INSTITUTE  বর্তমানে যা রাণীশংকৈল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় নামে পরিচিত। 


তিনি শিক্ষানুরাগী হিসেবে শুধু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানই স্থাপন করেননি, তার লাইব্রেরীও ছিল বিভিন্ন বইয়ে সমৃদ্ধ। তার সংগৃহীত বিভিন্ন বই এখনও দিনাজপুর সরকারী কলেজ ও কারমাইকেল কলেজ লাইব্রেরীতে সংরক্ষিত আছে ।

শিক্ষার পাশাপাশি হিন্দু ধর্মের প্রতিও ছিল রাজা টংকনাথের অগাধ অনুরাগ। রাজবাড়ি থেকে ২০০ মিটার দক্ষিণে হিন্দু ধর্মালম্বিদের জন্য তিনি নির্মান করেন  রামচন্দ্র বা জয়কালী মন্দির 

১৯৪৭ সালের ১৪ আগস্ট ভারতবর্ষ ব্রিটিশদের শাসন থেকে মুক্ত হলে রাজা টংকনাথ চৌধুরী ১৭ আগস্ট স্বপরিবারে ভারতে চলে যান। তবে কথিত আছে রাজা মৌমাছির আক্রমণের শিকার হয়ে অসুস্থ অবস্থায় উন্নত চিকিৎসার জন্য কলকাতায় যান এবং ১৯৪৮ সালে সেখানেই মৃত্যুবরণ করেন।

রাজা টংকনাথের তিন ছেলে  কর্মনাথ চৌধুরী, রুদ্রনাথ চৌধুরী এবং শেষনাথ চৌধুরী বর্তমানে ভারতেই অবস্থান করছেন।